দোহারে যত্রতত্র ইটভাটা পরিবেশ ও রাস্তা হুমকির মুখে

দোহারে যত্রতত্র ইটভাটা পরিবেশ ও রাস্তা হুমকির মুখে
ঢাকার দোহার উপজেলার যত্রতত্র গড়ে উঠেছে ইটের ভাটা। ফলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে জনজীবন। দেখার যেন কেউ নেই। প্রশাসন নীরব ভূমিকায়, দেখেও যেন না দেখার ভান করছে। এসব ইটভাটার কালো ধোঁয়া বাতাসের সঙ্গে মিশে পরিবেশের উপাদান বায়ুকে করছে দূষিত।
মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ আইনে বলা আছে আপাতত বলবৎ অন্য আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করিবার উদ্দেশ্যে কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা হইতে মাটি কাটিয়া বা সংগ্রহ করিয়া ইটের কাঁচামাল হিসাবে উহা ব্যবহার করিতে পারিবেন না।
এছাড়া পরিবেশের ছাড়পত্র, ডিসির অনুমতি ও লাইসেন্স থাকলেও  আবাসিক এলাকা” অর্থ এমন কোন এলাকা যেখানে কমপক্ষে ৫০ (পঞ্চাশ) টি পরিবার বসবাস করে, “জলাভূমি” অর্থ কোন ভূমি যাহা বৎসরের ৬ (ছয়) মাস বা তদূর্ধ্ব সময় পানির নিচে নিমজ্জিত থাকে এবং “বাগান” অর্থ এমন কোন স্থান যেখানে হেক্টর প্রতি কমপক্ষে ১০০ (একশত) টি ফলদ বা বনজ বা উভয় প্রকারের বৃক্ষ থাকে এমন এলাকায় ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। তবুও কি ভাবে দোহারে এমন স্থানগুলোতে ইটভাটা চলে? এমনটাই প্রশ্ন জনমনে।
ইটভাটার বিকট আওয়াজ, ধুলাবালিতে বায়ুদূষণ, আশপাশের ফসলি জমির মাটিদূষণ, গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ গাছের ফলন কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
উপজেলার মুকসুদপুরের মধুর খোলা, নারিশা ইউনিয়নের উত্তর শিমুলিয়া (জালালপুর) আবাসিক এলাকায় চলছে (এসবিআই) ইটের ভাটা, সুতারপাড়ার উত্তর ডায়ারকুম-ডায়াগজারিয়ায় পদ্মা ব্রিকস ফিল্ডস ও ঢাকা ব্রিকস ইন্ডাস্ট্রিজসহ পাঁচটি ইটভাটা, রাইপাড়ার ইসলামপুরে রয়েছে পাঁচটি ইটভাটা এবং মাহমুদপুরে রয়েছে একটি ইটভাটা। এছাড়াও নামে বেনানে এই উপজেলায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ টি ইটভাটা রয়েছে।
এসব ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল। এতে কৃষকরা হারাচ্ছেন ফসলি জমি এবং কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন। এছাড়া ইটভাটায় চলছে শিশুশ্রম ও শ্রমিক নির্যাতনের মতো নির্মম ঘটনা। ইটভাটার মালামাল পরিবহন করতে ব্যবহার করা হয় মাহেন্দ্র। এই মাহেন্দ্রোর চাকায় অচিরেই নষ্ট হচ্ছে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে নির্মিত রাস্তা। স্থানীয় এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ধুলায়।
দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ফজলে রাব্বি জানান, উপজেলার বিভিন্ন স্থানের ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাতহ থাকবে। পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত চলছে। যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আইন অমান্য করে ইটভাটা পরিচালনা করেন, তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন